তাঁর সম্পুর্ণ নাম টি ছিল-- শ্রীযুক্ত ঈশ্বরচন্দ্র বন্ধোপাধ্যায়। তিনি মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামের শ্রী ঠাকুরদাস বন্ধোপাধ্যায় পুত্র ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তাঁর পড়াশুনার প্রচন্ড ইচ্ছে ছিল। এর সাথে উনি ছিলেন খুব জেদী ও একগুঁয়ে। তাঁর মা বলতেন," আমার এই ছেলেটার ঘারব্যেঁকা।" অর্থাৎ উনি যা করবেন বলে একবার মনস্থির করতেন সেটি না করে ছাড়তেন না।
গ্রামের পাঠশালার পাঠ সমাপ্ত করে তিনি উচ্চশিক্ষার্তে কলকাতায় এলেন। ওঁর পিতা তখন কলকাতায় সামান্য মাইনের চাকরি করতেন। সেইখানেই পিতা ও পুত্র একত্রে বসবাস করতে লাগলেন। সারাদিন স্কুলের পড় বাড়ির কাজ, রান্নাবান্না ইত্যাদি তাঁকে করতে হত। তাই সারাদিন পড়শুনা করার তেমন সময় পেতেন না। উনি তাই রাত্রিবেলায় খাওয়া- দাওয়া সেরে পাশের পড়া পরতেন।
আমি যে সময়ের কথা বলছি তখন কোলকাতায় ঘরে- ঘরে বিজলী বাতি ছিল না। কেবল রাস্তায় আলো জ্বলত।ঘরে রাত জেগে পড়তে গেলে মাটির প্রদীপ কিংবা কেরোসিনের আলো জ্বালতে হত। তাতে তেলের অনেক খর্চা। তাই বিদ্যাসাগর মশাই একদিন ভাবলেন যে রাস্তার আলো তে পড়শুনা করলে কেমন হয়? যেমন ভাবা তার তেমন কাজ। এরপর থেকে রোজ রাতে আহারাদি সেরে তিনি স্ট্রীট লাইটের তলায় পড়তে লাগলেন।
কিন্তু এরপর ওঁকে একটি সমস্যার সম্মুখিন হতে হল। সারাদিন খাটাখাটনির ফলে রাতে উনি যেই না পড়তে বসতেন অমনি ঘুমে ঢুলে- ঢুলে পড়তে লাগলেন! দেখলেন, এ তো ভারি মুশ্কিল!!
একদিন মাথা খাঁটিয়ে এই সমস্যার অবর্থ উপায় ও তিনি বার করলেন। এরপর থেকে রাতে পড়তে বসার সময় তিনি তাঁর মাথার টিঁকি টা ল্যাম্প পোস্টে বেঁধে রাখলেন। তারপর যেই ঘুমে ঢুলে পড়তে লাগলেন ওমনি টিকিতে টান পড়তে লাগল আর তখ্খুনি ব্যাথার চোটে ঘুম ভেঙ্গে যেতে লাগল!
পরবর্তী কালে বিদ্যাসাগর মশাই সংস্কৃত ভাষার বিদ্যাসাগর পরীক্ষা পাশ করেন এবং ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর নামে সুপরিচিত হন। তিনি কলিকাতার সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ হন। এরপর মেট্রোপলিকাল ইন্স্টিট্যুশন নামক একটির কলেজের তিনি স্থাপনা করেন। এছাড়া বাংলার শিক্ষার জন্য বর্ণ পরিচয় রচনা, স্ত্রী - শিক্ষা প্রচার, বহুবিবাহ প্রথা বন্ধ করার মতো অনেক উল্লেখনীয় কাজ তিনি করেছিলেন।
Comments
Appreciate the author by telling what you feel about the post 💓
No comments yet.
Be the first to express what you feel 🥰.
Please Login or Create a free account to comment.