কেন দেব ফুল আমি তারে?
অনিমার স্বামী একজন সেনাবাহিনির উচ্চপদস্থ অফিসার। আর কয়েক বছর পর রিটায়ার করবেন। ঈশ্বরের অসিম কৃপায় অনিমার ছেলে ও মেয়ে দুজনেই যথার্থ মানুষ হয়েছে। তারা নিজেদের কেরিয়ার ও চাকরী সামলে যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় থাকে। মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি। জামাই কানাডার ই ছেলে। পূর্বপূরুষ পাঞ্জাবের বাসিন্দা ছিলো ।
ছেলের বিয়ে ও ঠিকঠাক। মেয়েটি কলকাতারই , তবে মাড়ওয়াড়ি। কিন্তু চমৎকার বাংলা বলতে পারে। ছেলের কোম্পানি তে কাজ করে। আগামী বছর একটা ভাল দিন দেখে ওদের চার হাত এক করে দেবেন এমনই ইচ্ছে আছে।
এমন সময় করোনার প্রকোপ। সবকিছু ওলট পালট হয়ে গেল। তারপর বাঁধল যুদ্ধ চিনা সৈনিক দের সাথে। অনিমার স্বামির বর্ডারে পোস্টিংগ হয়ে গেল। কিছুদিন ধরে কোনো খোঁজ নেই অনিমার স্বামির। চিন্তায় অনিমার নাওয়া খাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। সমানে ঠাকুরের সামনে বসে তাঁকে একমনে ডেকে চলেছে।
ছেলেমেয়ে মাকে চিন্তা করতে কত বারণ করেছে। তারা জানে যে তাদের বাবা ভালই আছে। অনেক সময় রিমোট যায়গায় ডিউটির সময় যোগাযোগ সম্ভব হয় না।
আজ অণিমাদের 30 তম বিবাহ বার্ষিকি। ভগবানের কাছে সে বলেছে যে আজ রাত বারটার মধ্যে যদি তার স্বামি বাড়ি না আসে তো সে কোনোদিন আর ভগবান কে মানবে না। কক্ষোনো তাঁকে ফুল জল দেবে না।
সারাদিন ভালভাল রান্না করে আজ সন্ধা থেকে সে সেজেগুজে বসে আছে। সাতটা বাজল, তারপর আট্টা-- ক্রমে দশটা যখন বাজে তখন অণিমা রাগে দুঃখে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়ল।
তখন মাঝরাতের কাছাকাছি হবে। হঠাৎ কিসের আওয়াজে অণিমার ঘুম ভেঙ্গে যায়। কিন্তু সে আশ্চর্য হয়ে দেখে যে তাঁর স্বামি ও পুত্র বড় একটা কেক হাতে দাঁড়িয়ে আছে। তাকে চোখ খুলতে দেখে তারা গান গাইতে থাকে---happy anniversary to you ।
ঘড়ির দিকে তাঁকিয়ে দেখে যে বারটা বাজতে তখোনো এক মিনিট বাকি আছে!!মানে ইশ্বর তাঁর কথা রেখেছেন!! শতবার সে মনে মনে ইশ্বরের প্রতি নমস্কার জানায়।
Comments
Appreciate the author by telling what you feel about the post 💓
No comments yet.
Be the first to express what you feel 🥰.
Please Login or Create a free account to comment.